প্রাথমিক প্রতিবিধানের গুরুত্ব, পদ্ধতি ও উপকরণ

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা - খেলাধুলার দুর্ঘটনা | NCTB BOOK

প্রাথমিক প্রতিবিধান হলো চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্তর্গত একটি প্রাথমিক বিভাগ। এই বিদ্যায় অভিজ্ঞ একজন প্রতিবিধানকারী কেউ দুর্ঘটনায় বা অসুস্থ হলে তাকে সঠিক পদ্ধতিতে ও যত্ন সহকারে প্রাথমিক প্রতিবিধান দিতে পারে। সম্পূর্ণ চিকিৎসা করা প্রতিবিধানের উদ্দেশ্য নয়। কারণ প্রতিবিধানকারী চিকিৎসক নন। প্রতিবিধানকারী ডাক্তার আসার আগ পর্যন্ত বা হাসপাতালে স্থানান্তর করার আগ পর্যন্ত অসুস্থ ব্যক্তির প্রাণ রক্ষা করা, সুস্থ করার পথ সুগম করা এবং রোগীর অবস্থা যেন আরও খারাপ না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে জীবনরক্ষার ভার নেওয়াই হলো প্রাথমিক প্রতিবিধানের উদ্দেশ্য। First Aid শব্দটি ভাঙ্গলে সহজে প্রাথমিক প্রতিবিধান কী তা বোঝা যায় ৷
 

F-Fast (দ্রুত): প্রাথমিক প্রতিবিধানকারীকে দ্রুত কাজ সম্পাদন করতে হবে। অন্যথায় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে ।
 

I-Investigation (অনুসন্ধান) : রোগীর অবস্থা ও পারিপার্শ্বিক সবকিছু অনুসন্ধান করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
 

R-Relief (আরাম) : সর্বপ্রথম রোগীর যন্ত্রণা লাঘব করে আরামের ব্যবস্থা করতে হবে।
 

S-Sympathy (সহানুভূতি) : রোগীকে সহানুভূতির সাথে দেখতে হবে। তাহলে সে অনেকটা সুস্থ বোধ করবে। 

 T-Treatment (চিকিৎসা) : প্রতিবিধানকারী দ্রুত তার সাধ্যমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। A-Arrangement (ব্যবস্থা ) রোগীকে প্রাথমিক প্রতিবিধানের পর ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। 

I-Immediate (তাৎক্ষণিক) : তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়ে ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে পাঠাতে হবে।
 

D-Disposal (অপসারণ করা) : দুর্ঘটনা স্থান থেকে রোগীকে সরাতে হবে অর্থাৎ মারাত্মক না হলে বাড়িতে প্রয়োজন হলে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। প্রাথমিক প্রতিবিধানের পদ্ধতি : প্রতিটি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে
হয়। 

প্রাথমিক প্রতিবিধানের পদ্ধতিগুলো হলো-
১. দ্রুত অথচ ঠান্ডা মাথায় আগের কাজ আগে ও পরের কাজ পরে করতে হবে।
২. রোগীকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে হবে।
৩. রোগীর জ্ঞান আছে কিনা দেখতে হবে।
৪. শ্বাস-প্রশ্বাসের বিঘ্ন দেখা দিলে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. রক্তক্ষরণ থাকলে তৎক্ষণাৎ বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে।
৬. শক দেখা দিলে তার প্রতিবিধান আগে করতে হবে।
৭. নাড়ির গতির প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।
৮. রোগীর জ্ঞান না থাকলে শরীরের কাপড়-চোপড় আলগা করে দিতে হবে।

৯. রোগী ও তার সাথী বা সকলকে আশ্বাস ও সাহস দিতে হবে।
১০. দর্শক যেন বেশি ভিড় করতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

১২. চোখের তারা অস্বাভাবিক কিনা, মুখ বিবর্ণ কিনা, মাথায় আঘাত আছে কিনা এবং রোগীকে উত্তাপ দিতে হবে কিনা এসবের দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
১৩. যত শীঘ্র সম্ভব ডাক্তারের নিকট হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাথমিক প্রতিবিধানের উপকরণ
 

নিম্নলিখিত উপকরণগুলো প্রাথমিক প্রতিবিধান করার সময় প্রয়োজন হয়—
১. জীবাণুমুক্ত তুলা বা গজ ২. লিন্ট ৩. স্প্লিন্ট ৪. প্যাড ৫. কাঁচি ৬. ত্রিকোণ ও রোলার ব্যান্ডেজ ৭. ডেটল ৮. প্যাড, ফ্লাট প্যাড ও রিং প্যাড, ৯. আয়োডিন ১০. বেনজিন ১১. একটি চিমটা ১২. সেফটিপিন, ১৩. ব্লেড, সেলাই করার জন্য সুচ, ১৪. স্পিরিট ১৫. লিউকো প্লাস্টার ১৬. আই প্যাড ১৭. এক টিউব বারনল ১৮. একটি ঔষধের ট্রে ১৯. একটি সিরিঞ্জ ২০. একটি ফার্স্ট এইড বক্স।

Content added || updated By
Promotion